SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

On This Page
ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - হিন্দু ধর্ম শিক্ষা - দ্বিতীয় অধ্যায় | NCTB BOOK
  •  মন্দিরে আমরা কী দেখতে পাই? সেখানে আমরা দেব-দেবী, প্রার্থনা-উপাসনা, পূজা-অৰ্চনা এগুলো দেখি। মন্দিরের পরিবেশটা একটু অন্যরকম, তাই নয় কি? সেখানে দেখতে পাই সবাই পরিষ্কার এবং পবিত্ৰ বস্ত্ৰ পরিধান করে উপাসনা করছে। একমনে ঈশ্বরের আরাধনা করছে। আমরা দেখলাম মন্দিরে যেতে হলে পরিষ্কার এবং শুদ্ধভাবে যেতে হয়। মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আমরা যে অভিজ্ঞতাগুলো লাভ করেছি, এবার সেগুলো সম্বন্ধে আর একটু বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।
  • এক্ষেত্রে প্রথমেই আসে শুচিতার কথা। কোনো মন্দিরে যাওয়ার সময় প্রথমেই আমাদের মন এবং শরীরকে পরিষ্কার ও পবিত্র করে যেতে হয় যাকে আমরা শুচিতা বলে থাকি। এবার আমরা ধর্মীয় আলোকে শুচিতা কী তা জানব।

 

শুচিতা 

শুচিতা মানে নির্মলতা, পবিত্রতা। এই পবিত্রতার শুরু হয় মন থেকে। মনে শুচিতা থাকলে আমরা খারাপ চিন্তা থেকে বিরত থাকি, কারও ক্ষতি করতে চাইনা, কারও অশুভও কামনা করি না। মনে শুচিতা থাকলে আমরা আমাদের প্রতিদিনকার জীবনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।

শুচিতা মানে যেমন মনের পবিত্রতা, তেমন শরীরের পবিত্রতাও। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক, পরিবেশ, প্রকৃতি দেখলে অন্যের মনেও পবিত্রতার অনুভূতি আসে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাটা ঈশ্বর পছন্দ করেন। শুচিতা ধর্মের অঙ্গ। শুচিতার মাধ্যমে শরীর ও মনের পবিত্রতা আনা যায়। শরীর ও মনকে সাধনার উপযোগী করার জন্য শুচিতা প্রয়োজন। শুচিতা প্রধানত দুই প্রকার, যথা: অভ্যন্তরীণ শুচিতা ও বাহ্যিক শুচিতা।

 

অভ্যন্তরীণ শুচিতা : অভ্যন্তরীণ শুচিতা বলতে মনের বা অন্তরের শুচিতাকে বোঝায়। বিদ্যার্জন, সদাচরণ প্রভৃতির মাধ্যমে মনের বা অন্তরের শুচিতা অর্জন করা যায়। পৃথিবীর সকল প্রাণীর মঙ্গল কামনা করা, সবার জন্য সুচিন্তা করা, মানুষের মনে কষ্ট দিয়ে কথা না বলা এগুলো সবই ভালো মনের পরিচয় বা অভ্যন্তরিণ - শুচিতার প্রতিফলন।

বাহ্যিক সুচিতা বাহ্যিক শুচিতা বলতে শারীরিক শুচিতা বোঝায়। জল দিয়ে বাহ্যিকভাবে শুচি হওয়া যায়। আমরা প্রতিদিন হাত-মুখ ধুই, স্নান করি। এভাবে বাহ্যিক শুচিতা অর্জন করি। এছাড়া পোশাক-পরিচ্ছদ পরিষ্কার করার মাধ্যমেও বাহ্যিক শুচিতা অর্জন করা যায়।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: শুচিতার ন্যায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও ধর্মের অঙ্গ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বলতে সুন্দর ও পরিপাটি অবস্থাকে বোঝায়। উপাসনা, প্রার্থনা, পূজা-পার্বনের সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতে হয়। কারণ ধর্মীয় কাজের ক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রয়োজন সবার আগে। অপরিষ্কার অবস্থায় ধর্মীয় কাজে মন বসে না। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মধ্যে পড়ে এমন আরও অনেক কিছু আছে। যেমন, নিজের কাপড়-চোপড় গুছিয়ে রাখা, বাড়ির বিভিন্ন জিনিসপত্র পরিপাটি করে রাখা, আশপাশের পরিবেশ সুন্দর রাখা। বিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর রাখা ইত্যাদি। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ব্যক্তিগত হতে পারে আবার সর্বজনীনও হতে পারে।

নিজের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখতে হয়। নিজের শরীরের যত্ন নিতে হয়। এগুলো ব্যক্তিগত পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা। বিদ্যালয়, মন্দির, ধর্মক্ষেত্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। বাড়ির আধিনা, রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ, আশপাশের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। সবার অংশগ্রহণে এই পরিচ্ছন্নতা অর্জিত হয়। এটাই সর্বজনীন পরিচ্ছন্নতা।

 

শুচিতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব :

শুচিতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ধর্মচর্চার পূর্বশর্ত। শুচিতা প্রার্থনার অপরিহার্য অংশ। শুচিতা ও পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতায় শরীর ও মন সুস্থ থাকে। আর শরীর ও মন সুস্থ থাকলে ধর্ম-কর্ম ভালো হয়। পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া যায়। সর্বজনীন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সর্বক্ষেত্রে সুন্দর পরিবেশ তৈরি হয়। মূলত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় সবার মঙ্গল হয়।

  •  চলো, নিচের মিলকরণটি করি। বাম দিকের কলামের তথ্যের সাথে ডান দিকের তথ্য মিল করতে হবে। দেখো, একটি মিল করে দেওয়া আছে।

 

Content added || updated By

Promotion